নোয়াখালী জেলা বাংলাদেশের একটি প্রশাসনিক জেলা যা চট্টগ্রাম বিভাগে অবস্থিত। চট্টগ্রাম জেলায় ২০২২ সালের জনশুমারি অনুযায়ী মোট জনসংখ্যা ৯১,৬৩,৭৬০ জন। এদের মধ্যে পুরুষ ৪৫,৬৬,০৩৯ জন এবং মহিলা ৪৫,৯৭,০৭৬ জন এবং বাকি ৬৪৫ জন হিজড়া । চট্টগ্রাম জেলার আয়তন ৩৪৩৫.৭ বর্গ কিলোমিটার। এটি বাংলাদেশের পূর্ব উপকূলে অবস্থিত এবং আঁটটি (৮টি) উপজেলা এবং ৭৩টি ইউনিয়ন নিয়ে চট্টগ্রাম জেলা গঠিত। জেলা সদর নোয়াখালী শহরেই অবস্থিত।
নোয়াখালী জেলা
নোয়াখালী জেলা বাংলাদেশের দক্ষিণ-পূর্বাঞ্চলে অবস্থিত বাংলাদেশের একটি অংশ। এটি চট্টগ্রাম বিভাগের আটটি জেলার মধ্যে একটি এবং ফেনী, চট্টগ্রাম, লক্ষ্মীপুর, কুমিল্লা এবং ব্রাহ্মণবাড়িয়ার সীমান্তবর্তী। নোয়াখালী জেলার মোট আয়তন ৩,৪৩৫.৬৩ বর্গকিলোমিটার। নোয়াখালী জেলার প্রাচীন নাম ছিল ভুলুয়া। নোয়াখালী সদর থানার পূর্ব নাম ছিল সুধারাম। নোয়াখালী জেলার উত্তরে কুমিল্লা জেলা্, দক্ষিনে মেঘনার মোহনা এবং বঙ্গোপসাগর, পূর্বে ফেনি জেলা এবং চট্টগ্রাম জেলা পশ্চিমে লক্ষ্মীপুর এবং ভোলা জেলা অবস্থিত।
নোয়াখালী জেলার একটি উল্লেখযোগ্য অংশ উপকূলীয় এলাকা নিয়ে গঠিত এবং বাকি বেশিরভাগই সমতলভূমি।দেশের দক্ষিণ-পূর্বাঞ্চলে অবস্থিত বাংলাদেশের নোয়াখালী জেলা চট্টগ্রাম বিভাগের ১২টি জেলার মধ্যে একটি। এটি একটি প্রশাসনিক জেলা যার সদর দপ্তর নোয়াখালী শহরে অবস্থিত। জেলায় পাঁচটি মহকুমা ও ১১টি উপজেলা রয়েছে।
নোয়াখালী কিসের জন্য বিখ্যাত
অনেকেই জানতে চান যে, নোয়াখালী জেলা কিসের জন্য বিখ্যাত ? উত্তরঃনোয়াখালী জেলা তাদের অতিথি আপ্যায়ন, তৈরি পিঠা যেমন ম্যারা পিঠা, ছাইন্না পিঠা, পাটিসাপটা পিঠা, পান্ডুয়া এসব ছাড়াও ঐতিহ্যবাহী মরিচ খোলা, খোলাজা, নারকেল নাড়ু ইত্যাদির জন্য বিখ্যাত। এ জেলার সকল তথ্য (www.noakhali.gob.bd) তে সংরক্ষিত আছে।
- নোয়াখালী ঐতিহ্যবাহী মরিচ খোলা, খোলাজা, নারকেল নাড়ু ইত্যাদির জন্য বিখ্যাত। স্বর্ণদ্বীপ এবং নিঝুম দ্বীপ এর জন্যও নোয়াখালী জেলা বিখ্যাত হয়ে উঠেছে।
- নোয়াখালী জেলা তার মনোরম সৌন্দর্য এবং সমৃদ্ধ সাংস্কৃতিক ঐতিহ্যের জন্য বিখ্যাত।এছাড়াও তাদের অতিথি আপ্যায়ন, তৈরি পিঠা যেমন ম্যারা পিঠা, ছাইন্না পিঠা, পাটিসাপটা পিঠা ইত্যাদি সুস্বাদু খাবারের জন্য বিখাত।
এটি রাজধানী শহর, ঢাকা এবং অন্যান্য গুরুত্বপূর্ণ শহর যেমন চট্টগ্রাম ও সিলেটের নিকটবর্তী হওয়ার জন্যও পরিচিত। রাধানগর সমুদ্র সৈকত এবং বড়-কাঠালিয়া মসজিদের মতো অনেক আকর্ষণ থাকায় এটি পর্যটকদের জন্য একটি আদর্শ স্থান।
নোয়াখালী দর্শনীয় স্থান
- নোয়াখালী জেলার বিখ্যাত দর্শনীয় স্থান গুলোর মধ্যে বজরা শাহি জামে মসজিদ, ভাসান চর, নিঝুম দ্বিপ, স্বর্ণদ্বীপ ইত্যাদি উল্লেখযোগ্য। যুগের পর যুগ ধরে এসব স্থানের জনপ্রিয়তা এ জেলাকে এক অনন্য মর্যাদা দান করেছে।
বজরা শাহি জামে মসজিদ | ঐতিহাসিক এই নিদর্শনটি নোয়াখালী জেলার সোনাইমুড়িতে অবস্থিত। |
ভাসানচর | ভাসানচর মেঘনা নদী ও বঙ্গোপসাগরের মোহনায় জেগে উঠা বাংলাদেশের একটি ছোট দ্বীপ যেটি মায়ানমারদের আশ্রয়স্থল হিসাবে পরিচিত। |
নিঝুম দ্বীপ | নিঝুম দ্বীপ বাংলাদেশের একটি ছোট্ট দ্বীপ। এটি নোয়াখালী জেলার হাতিয়া উপজেলার অন্তর্গত। |
স্বর্ণদ্বীপ | ১৯৭৮ সালে নোয়াখালীর দক্ষিণে বঙ্গোপসাগর ও মেঘনা নদীর মোহনায় জেগে ওঠে জাহাইজ্জ্যার চর। যার বর্তমান নাম স্বর্ণদ্বীপ। |
রুহুল আমিন গ্রন্থাগার ও স্মৃতি জাদুঘর | বাংলাদেশের মহান মুক্তিযুদ্ধের চরম সাহসিকতার আর অসামান্য বিরত্তের স্বীকৃতিস্বরূপ যে সাতজন বীরশ্রেষ্ঠকে বাংলাদেশের সর্বোচ্চ সামরিক সম্মান বীরশ্রেষ্ঠ উপাধিতে ভূষিত করা হয়েছে তার মধ্যে অন্যতম মোঃ রুহুল আমিন অন্যতম। তিনি বর্তমান সুনাইমুরি তে জন্মগ্রহন করেন।তার নামে বীরশ্রেষ্ঠ মোঃ রুহুল আমিন গ্রন্থাগার ও স্মৃতি জাদুঘর।২০০৮ সালের ২০ জুলাই নোয়াখালী জেলা সদর থেকে ২৫ কিলোমিটার দূরে সোনাইমুড়ী উপজেলার সদরের দেওটি ইউনিয়নের বাগপাচড়া গ্রামে নির্মাণ করা হয়। |
নোয়াখালী জেলা বাংলাদেশের একটি অনন্য জেলা। এটি দেশের স্বল্পোন্নত জেলাগুলির মধ্যে একটি, এর উন্নয়নে অনেক চ্যালেঞ্জ রয়েছে। এই জেলায় একটি খুব বৈচিত্র্যময় জনসংখ্যা রয়েছে, বেশিরভাগই গ্রামীণ, যারা অনেক ভাষায় কথা বলে এবং বিভিন্ন ধর্ম অনুসরণ করে। এই অঞ্চলে প্রচুর নদী, খাল এবং হ্রদ ব্যবস্থা রয়েছে যা এটিকে জলজ সম্পদের একটি গুরুত্বপূর্ণ কেন্দ্র করে তুলেছে।
নোয়াখালী জেলার উপজেলা সমূহ
নোয়াখালী জেলায় সর্বমোট ৯টি উপজেলা, ৮ টি পৌরসভা, ৭২ টি ওয়ার্ড, ১৫৩ টি মহল্লা, ৯১ টি ইউনিয়ন, ৮৮২ টি মৌজা এবং ৯৬৭ টি গ্রাম রয়েছে। উপজেলা সমূহ হচ্ছেঃ ১)নোয়াখালী সদর ২) বেগমগঞ্জ ৩) চাটখিল ৪) কোম্পানীগঞ্জ ৫) হাতিয়া ৬) সেনবাগ ৭) সুবর্ণ চর ৮) সোনাইমুড়ি ৯) কবিরহাট। এ জেলার সকল তথ্য www.noakhali.gov.bd তে সংরক্ষিত আছে।
নোয়াখালী জেলার বিখ্যাত খাবার
- বরগের(কলাপাতার)মরিচ খোলা/পাতুড়ি
- খোলাজা
- নারকেল নাড়ু
- ম্যারা পিঠা
- ছাইন্না পিঠা
- পাটিসাপটা পিঠা
নোয়াখালী জেলার বিখ্যাত ব্যক্তির নাম
নোয়াখালী বিখ্যাত ব্যক্তি হলেনঃ শহীদ বীর শ্রেষ্ঠ মোহাম্মদ রুহুল আমিন, ওবায়দুল কাদের, শহীদ বুদ্ধিজীবী এ.এন.এম. মুনীর চৌধুরী, হবিবুর রহমান ,আতাউর রহমান, চিত্তরঞ্জন সাহা অন্যতম। এছাড়াও বাংলা একাডেমি বই মেলার উদ্যোক্তা, গীতিকার, সুরকার, সংগীত পরিচালক, গায়ক, মুক্তিযোদ্ধা আহমেদ ইমতিয়াজ বুলবুল।এ জেলার সকল তথ্য www.noakhali.gob.bd তে সংরক্ষিত আছে।
নোয়াখালী জেলার বিখ্যাত ব্যক্তিবর্গ
- ওবায়দুল কাদের (রাজনীতিবিদ)১৯৫২ সালের ১ জানুয়ারি নোয়াখালী জেলার কোম্পানীগঞ্জ থানার বড় রাজাপুর গ্রামে জন্মগ্রহণ করেন। তার পিতার নাম মোশারফ হোসেন এবং মাতা ফজিলাতুন্নেছাশহীদ বুদ্ধিজীবী
- এ.এন.এম. মুনীর চৌধুরী তিনি ছিলেন বাংলা সাহিত্যের একজন শক্তিধর ভাস্কর এবং দক্ষ কারুকার।
- হবিবুর রহমান ছিলেন মুক্তিযুদ্ধ চলাকালীন সময়ে বাংলাদেশের প্রথম শহীদ বুদ্ধিজীবী
- আতাউর রহমান মঞ্চ ও টেলিভিশন অভিনেতা, মঞ্চ নির্দেশক এবং লেখক
- চিত্তরঞ্জন সাহা বাংলাদেশের প্রকাশনা শিল্পের একজন পথিকৃৎ, বাংলা একাডেমি বই মেলার উদ্যোক্তা
- আহমেদ ইমতিয়াজ বুলবুল তিনি একাধারে গীতিকার, সুরকার, সংগীত পরিচালক, গায়ক, মুক্তিযোদ্ধা
- কবির চৌধুরী ছিলেন একজন প্রথিতযশা শিক্ষাবিদ, প্রাবন্ধিক ও অনুবাদক
- আবদুশ শাকুর বাংলাদেশ সরকারের সাবেক সচিব, সাহিত্যিক ও সুরকার
- ঝর্ণা ধারা চৌধুরী তিনি সমাজ কর্মী ও নোয়াখালী গান্ধী আশ্রম ট্রাস্ট এর সাবেক সেক্রেটারি
- ঔপন্যাসিক প্রণব ভট্ট
- আনিসুল হকএকজন রাজনীতিবিদ, ব্যবসায়ী এবং টেলিভিশন উপস্থাপক
- শিরীন শারমিন চৌধুরী যিনি দেশের প্রথম নারী স্পিকার, রাজনীতিবিদ
- মোতাহের হোসেন চৌধুরী শিক্ষাবিদ ও লেখক
- অভিনেত্রীফেরদৌসী মজুমদার
- সা’দত হুসাইন একজন মুক্তিযোদ্ধা, সাবেক মন্ত্রীপরিষদ সচিব এবং সরকারি কর্ম কমিশনের প্রাক্তন চেয়ারম্যান
- জুয়েনা আজিজ হলেন গণপ্রজাতন্ত্রী বাংলাদেশ সরকারের সিনিয়র সচিব
- মাহমুদুর রহমান বেলায়েত মুক্তিযুদ্ধকালীন কমান্ডার, বিএলএফ (মুজিব বাহিনী), বৃহত্তর নোয়াখালী
- আমিনুল হক বাংলাদেশের ৬ষ্ঠ অ্যাটর্নি জেনারেল, আইনজীবী
- কাজী গোলাম রসুল বঙ্গবন্ধু হত্যা মামলার বিচারক
- শাহাদাত হোসেন চৌধুরী সেনাবাহিনীর অবসরপ্রাপ্ত ব্রিগেডিয়ার জেনারেল, বর্তমানে বাংলাদেশ নির্বাচন কমিশনের একজন কমিশনার
- হেমপ্রভা মজুমদার ব্রিটিশ বিরোধী স্বাধীনতা আন্দোলনের একজন ব্যক্তিত্ব ও অগ্নিকন্যা
- বীর বিক্রম আবুল কালাম আজাদ
- মোফাজ্জল হায়দার চৌধুরী একজন মননশীল প্রবন্ধকার, বাংলা ভাষা ও সাহিত্যের গবেষক, শিক্ষাবিদ এবং বুদ্ধিজীবী ছিলেন
- মাইনিং ইঞ্জিনিয়ার ওবায়েদ উল্যা ইংরেজ শাসিত ভারতবর্ষে অবিভক্ত বাংলার প্রথম মাইনিং ইঞ্জিনিয়ার ওবায়েদ উল্যা ১৮৭৬ সনে নোয়াখালী জেলার সুধারাম থানাধীন সল্লাঘটিয়া গ্রামে জন্ম গ্রহণ করেন
- আবদুল মালেক উকিল নোয়াখালী জেলার কৃতি সন্তান বিশিষ্ট রাজনীতিবিদ, বিজ্ঞ আইনজীবী মরহুম আবদুল মালেক উকিল নোয়াখালী জেলার সুধারাম থানার রাজাপুর গ্রামে জন্মগ্রহণ করেন।
FAQ Section
প্রশ্নঃ নোয়াখালীর উপজেলা কয়টি ?
উত্তরঃ নোয়াখালী ৯ টি উপজেলা
নিয়ে গঠিত।
প্রশ্নঃ নোয়াখালী কিসের জন্য বিখ্যাত ?
উত্তরঃ নোয়াখালী জেলা
তাদের অতিথি আপ্যায়ন, তৈরি পিঠা যেমন ম্যারা পিঠা, ছাইন্না পিঠা, পাটিসাপটা
পিঠা, পান্ডুয়া এসব ছাড়াও ঐতিহ্যবাহী মরিচ খোলা, খোলাজা, নারকেল নাড়ু
ইত্যাদির জন্য বিখ্যাত। বিস্তারিত জানতে পুরো পোস্টটি পড়ুন।
প্রশ্নঃনোয়াখালীর দর্শনীয় স্থান কি কী ?
উত্তরঃ নোয়াখালীর
অনেকগুলো দর্শনীয় স্থান আছে তার মধ্যে স্বর্ণদ্বীপ, নিঝুম দ্বীপ
অন্যতম।বিস্তারিত জানতে পুরো পোস্টটি পড়ুন।